■■■ ব্যাংক রিটেন কলাকৌশল ■■■
যারা প্রিলি নিয়ে মোটামুটি আত্মবিশ্বাসী তারা রিটেন প্রস্তুতির ব্যাপারে নিম্নলিখিত কৌশলগুলো দেখতে পারেন । কেননা ব্যাংক জব প্রাপ্তিতে রিটেন মার্কস ই মূল ভূমিকা রাখে ।
●সর্বমোট নম্বর = ২০০
●বাংলা + ইংরেজি অংশ = ১৩০/১৫০
●গণিত অংশ = ৫০ /৭০
■■গণিত অংশ ■■
ব্যাংক জব প্রাপ্তিতে গণিত অংশকে হৃৎপিণ্ডের সাথে তুলনা করা হয় । তাই এই অংশ যত ভাল করবেন হাজার হাজার ক্যাণ্ডিডেটকে তত সহজে পিছনে ফেলতে পারবেন । যারা মনে করেন গণিত এর বেস ভাল না তারা আসলে ভুলের মধ্যে আছেন । কারণ গণিত হল চর্চার ব্যাপার স্যাপার, যে যত বেশি প্র্যাক্টিস করবে সে তত বেশি এক্সপার্ট হবে ( এক্সর্টা অর্ডিনারি পার্সনদের কথা বাদ দিয়ে জীবন পরিচালনা করবেন)।
¤ প্রথমত, বিগত সালের সব ফ্যাকাল্টির রিটেন ম্যাথ গুলো স্টেপ বাই স্টেপ অনুশীলন করতেই থাকুন । তবে বুঝে বুঝে প্রতিটি ম্যাথ করবেন । এর পাশাপাশি প্রতিদিন লাঞ্চের পর অথবা ঘুমানোর পূর্বে একটি করে রিটেন সলভ্ ভিডিও মনোযোগ দিয়ে দেখবেন ।
¤ চ্যাপ্টার ভিত্তিক কিছু কিছু ম্যাথ অবশ্যই পেয়ে থাকবেন যেগুলো বার বার দেখতে হয় সেসব বিশেষ ভাবে মার্ক করে রাখবেন যেন রিভিশন দিতে সুবিধা হয় । তবে সবসময় ভাববেন না ব্যাংকে কঠিন কঠিন ম্যাথ আসবে । তাই সহজ কঠিন মিলিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন ।
¤ একাধিক রাইটার এর বই সংগ্রহ করে থাকলে সেক্ষেত্রে সেম চ্যাপ্টার এর ম্যাথ এক সাথে দেখার অভ্যাস করার চেষ্টা করবেন । এতে ম্যাথ দক্ষতা বৃদ্ধি পায় ।
¤ বিভিন্ন গ্রুপে ম্যাথ দেয়া হয় , দিনের একটা সময় অনলাইনে এসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন অথবা ম্যাথ গুলো রেগুলার নোট খাতায় সংগ্রহ করবেন ।
¤ চ্যাপ্টার ভিত্তিক যে কোন রিটেন ম্যাথ বই যত দ্রুত আয়ত্ত করতে পারবেন তত বেশি ফ্যাকাল্টি টাইপ ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন ।
¤ ম্যাথের ব্যাপারে একটু ফ্যাস্টিডিয়াস বা ক্রেজি হলেও হতে পারেন- বিভিন্ন বই/ ওয়েবসাইট/ নেট/ গ্রুপ যেখানেই ম্যাথ দেখবেন একটু ট্রেসপাস টাইপ বিহেভ করবেন অর্থাৎ নাক গলানোর চেষ্টা করবেন ।
■■ বাংলা + ইংরেজি অংশ ■■
● লেটার অংশ ●
এ যাবত ব্যাংক পরীক্ষায় আসা লেটার এর সকল ফরম্যাট গুলো দেখতে থাকবেন । সবচেয়ে ভাল হয় পরীক্ষার মত করে সপ্তাহে 2/3 টা লেটার এ টু জেড খামসহ খাতায় লিখে অনুশীলন করবেন । তাহলে পরীক্ষার হলে টাইম ম্যানেজমেন্ট করা সুবিধা হয় ।
● ট্রান্সেলশন অংশ●
এই অংশটি ব্যাংক পরীক্ষায় খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । কারণ কথিত আছে, ট্রান্সেলশন ভাল হলে ম্যাথ এর মত ভাল মার্কস পাওয়া যায় । সেক্ষেত্রে রেগুলার নিচের কাজগুলো করতে পারেনঃ
¤ বিগত সালের ট্রান্সেলশন সমূহ রেগুলার অনুশীলন করতেই থাকুন । এই পার্ট প্রস্তুতিতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হয় । অর্থাৎ, সকাল + বিকাল + সন্ধ্যা তিন বেলা তিনটা/ দুইটি করে রেগুলার অনুশীলন করবেন । যারা ভাবছেন ইংরেজি তে গাধার চেয়েও উইক তারা ভুল ভাবনা নিয়ে আছেন । কারণ ট্রান্সেলশন অনুশীলন করলেই ভাল করা সম্ভব হয় সেক্ষেত্রে ভোকাবুলারি বেস্ টা গড়ার প্রাণপণ চেষ্টা করবেন ।
¤ ইউটিউব থেকে সার্চ করে ডেইলি স্টার এডিটোরিয়াল রেগুলার একটি করে একাধিকবার ভেঙে ভেঙে অনুশীলন ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখবেন । এটি অনুবাদ দক্ষতা ও ভোকাবুলারি দুটোই উপকারে আসে ।
¤ পত্রিকার এডিটোরিয়াল অংশ টা রেগুলার বার বার খাতায় লিখে অনুশীলন করবেন, এতে আপনার সাবজেক্ট, ভার্ব এগ্রিমেন্ট ব্যাপার গুলো মাথায় ক্যাচ করতে সহায়তা করবে ।
● প্যাসেজ অংশ ●
এই অংশটি অনেকেই গুরুত্ব দিতে চান না অথচ খুব ভাল মার্কস তোলা যায় । এখন যে হারে কম্পিটিশন বেড়ে গেছে সেক্ষেত্রে কোন অংশে দুর্বলতা রাখবেন না। প্যাসেজ অংশ ভাল করার জন্য নিচের প্রক্রিয়া সমূহ দেখতে পারেনঃ
¤ বিগত সালের ব্যাংক প্যাসেজগুলো একটু বিশ্লেষণ করবেন ।
¤ প্রশ্নের উত্তর গুলো খেয়াল করলে দেখবেন হুবুহু কখনও প্যাসেজ থেকে উত্তর করা হয়নি । সুতরাং এই ব্যাপারে একটু সতর্ক হলেই ভাল মার্কস তুলতে পারবেন ।
¤ পরীক্ষায় প্যাসেজ পড়ার পূর্বেই প্রশ্নগুলো পড়ে নিবেন, তাহলে উত্তর করার ব্যাপারে ভাল এডভানটেজ পাওয়া যায় ।
¤ তবে খেয়াল রাখবেন প্রশ্নের উত্তর গুলো যেন হুবুহু কাট কপি পেস্ট না হয় অর্থাৎ প্যাসেজ থেকে সাহায্য নিয়ে নিজের মত করে গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করবেন ।
● বাংলা ও ইংরেজি ফোকাস অংশ ●
এই দুটি অংশ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । কারণ তথ্যসমৃদ্ধ খুব সুন্দর ভাবে লিখে আসতে পারলে খুব ভাল মার্কস তুলতে পারবেন । যেহেতু কম্পিটিশন বেড়ে গেছে সেহেতু নিজেকে মেধা তালিকায় দেখতে চাইলে অবশ্যই খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা জানতে হবে। তবে আপনারা অনেকেই ফোকাস রাইটিং নিয়ে অহেতুক টেনসন করে থাকেন । নিচের প্রক্রিয়া সমূহ অনুসরণ করে দেখতে পারেনঃ
¤ প্রথমেই গুরুত্বপূর্ণ ফোকাস গুলোর একটি তালিকা খাতায় লিপিবদ্ধ করবেন ।
¤ বিভিন্ন ফোকাস ম্যাটেরিয়াল সংগ্রহ করবেন, এক্ষেত্রে কোন প্রকার কার্পণ্য করবেন না প্লিজ ।
¤ বিভিন্ন ডাটা, টেবিল , চার্ট, সুবিধা/অসুবিধা, পজিটিভ/ নেগেটিভ সাইড নিজ হাতে নোট করবেন । অর্থাৎ ফোকাস ম্যাটেরিয়াল থেকে সাহায্য নিয়ে নিজের মত করে সবকিছু গুছিয়ে রাখবেন ।
¤ পরীক্ষায় সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা যায়, শুরুতে কি লিখব বা কিভাবে শুরু করা উচিত এই নিয়ে দ্বিধায় পরে যান, তাই পরীক্ষার হলে না, এসব ভাবনা বাসায় বসে ঠিক করে নিতে হবে। অর্থাৎ, একটা মান সম্মত প্লানিং বাসায় ঠিক করে নিয়ে ওসব রেগুলার লিখে অনুশীলন করবেন । তাহলে টাইম ম্যানেজমেন্ট ও ভাল মেইন্টেইন করতে পারবেন ।
¤ উদাহরণস্বরূপঃ ব্যাংক রিলেটেড ফোকাস/ করোনা ভাইরাস ও ইহার ইত্যাদি ইত্যাদি প্রভাব/ ইন্টারনেট/ টেকনোলজি/ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম/ অর্থনীতি তে বিভিন্ন জিনিসের ভূমিকা ................ ইত্যাদি ইত্যাদি ফোকাস সহ আপনার তালিকাকৃত অন্যান্য ফোকাস গুলো শুরুতে , শেষে এবং মাঝের অংশে কিভাবে কি কি লিখবেন বা ডাটা , চার্ট, টেবিল গুলো কিভাবে সাজানো যায় তা প্লানিং করে রেগুলার অনুশীলন করবেন, দেখবেন ইনশাআল্লাহ এই পার্ট টা একসময় দুধভাত হয়ে গেছে ।
¤ পরীক্ষায় দেখা গুলো আপনার তালিকাকৃত ফোকাসের বাহিরে ব্যতিক্রম কোন ফোকাস এসেছে, তখন কি করবেন?
একটু ও ঘাবড়ে যাবেন না, এক্ষেত্রে একটু কৌশলী হলেই খুব সুন্দর ভাবে লিখে আসতে পারবেন । যেহেতু আপনি রিলেটেড টপিকস্ সম্পর্কে আইডিয়া নিয়ে রেখেছেন সেহেতু সেই আলোকেই পজিটিভ নেগেটিভ সাইডসহ লিখে আসবেন । ভুল করেও কোন অংশ স্কিপ করা যাবে না।
আপনার প্রথম পরীক্ষায় সাফল্য পেলে সত্যিই সেটা ভাষায় এক্সপ্রেস করার মত না । পিডিএফ ফাইলে রোল খুঁজে পাওয়ার আনন্দ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি হয় না।
তবে অনেকেই বার বার পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন, হয়ত কোথাও কোন লেকস রয়ে গেছে, সেটা রিকভারি করার চেষ্টা করবেন ।
জানেন ই তো ------
ব্যর্থতার অপর পিঠেই সফলতা, তাই হতাশ হওয়ার কোন অবকাশ নেই ।।
পরিশ্রমীদের জন্য শুভ কামনা রইল ।
Post a Comment